বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
শেষ বলে চামিকা করুনারত্নের বলে হারিস রউফ বোল্ড হতেই আনন্দে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। ষষ্ঠ বারের মতো যে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরলো তারা। ফাইনালে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে ছন্দময় ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে ২৩ রানের অনন্য এক জয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ফাইনালে খেলতে নামলেই খেই হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত চারবার শিরোপা মঞ্চে খেলে তিনবারই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলটি শিরোপা খুঁইয়েছে। তাও আবার এমন এক দলের কাছে যারা নিজ দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় টালমাটাল এক অবস্থায়। মাঠে যাদের পারফরম্যান্সে ছিল না কোনও অস্থিরতা। বরং অদম্য মনোবলে উজ্জীবিত হয়ে মাঠে অবিশ্বাস্য সব পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে।
এদিকে পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট খেলা পাকিস্তান লঙ্কানদের বিপক্ষে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ছন্নছাড়া ক্রিকেট খেলেছে। শুরুতেই লঙ্কাদের অল্প রানে বেঁধে ফেলার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি। বাবরের দুর্বল অধিনায়কত্বের সুযোগ নিয়ে ১৭০ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে ৬ উইকেটে। কঠিন সেই লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত ছোঁয়া হয়নি পাকিস্তানের টপ অর্ডারের ব্যর্থতায়।
সব মিলিয়ে চতুর্থবারের মতো শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে। আগের তিনবারের দেখায় দুটি ফাইনাল জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। বাকি একটি পাকিস্তান। আজকের ম্যাচ জেতার পর দুই দলের ব্যবধান এখন ৩-১। তবে এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি ফাইনাল খেলেছে শ্রীলঙ্কাই। সবমিলিয়ে ১২ বার ফাইনাল খেলেছে। তবে এবারই প্রথম কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে।
১৭১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামান মিলে প্রতিরোধ গড়েন। দু’জন মিলে ৭১ রানের জুটি গড়লেও তাদের স্লো ব্যাটিংয়ে রানরেটের চাপ বেড়ে যায় তাদের। সেই রান রেটের চাপেই মূলত পিষ্ট হয় বাবর আজমের দল। ফখর জামান (৩২) ও রিজওয়ান (৫৫) আউট হতেই একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে। শেষ ওভারেও জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। হাতে একটি উইকেট। শেষ বলে হারিস বোল্ড হলে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয় ১৪৭ রানে।
প্রমোদ মাদুশানের দারুণ বোলিংয়েই ছিন্নভিন্ন হয়েছে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ। ৩৪ রানে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নিয়েছেন। হাসারাঙ্গাও তিনটি উইকেট নিয়ে অবদান রেখেছেন জয়ে। এছাড়া চামিকা দুটি ও থিকশানা একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা মাঠে কার্যকর করে দেখিয়েছিলেন পাকিস্তানের দুই পেসার নাসিম শাহ ও হারিস রউফ। তৃতীয় বলে কুশল মেন্ডিসকে শূন্যতে বোল্ড করেন নাসিম। তার পর তো লঙ্কান দল হারিস রউফের গতিতে কেঁপে উঠে। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ায় স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে শুধু ৪২ রান।
৯ ওভার শেষে লঙ্কানরা পড়ে যায় আরও বিপদে- ৫ উইকেটে স্কোর দাঁড়ায় ৬২! কঠিন চাপে থাকা অবস্থায় দলটি যে এভাবে মাথা তুলে দাঁড়াবে তা কে ভাবতে পেরেছিল? করুণ অবস্থা থেকেই লঙ্কানদের টেনে তুলতে অবদান রাখেন ভানুকা রাজাপাকশে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তাদের জুটিতে যোগ হয় ৫৮ রান। ২১ বলে ৩৬ রান করা হাসারাঙ্গাকে বিদায় দেন রউফ। তার পরেও থেমে রাখা যায়নি তাদের। মূলত রাজাপাকশের ব্যাটেই লঙ্কানদের লড়াইয়ের অবস্থানে চলে যাওয়া। ৩৫ বলে পেয়েছেন ফিফটি এই ব্যাটার। শেষ দিকে ৪৫ বলে ৭১ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে অপরাজিত থেকেছেন। তাতে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়। সঙ্গে ১৪ রানে ক্রিজে ছিলেন চামিকা করুনারত্নে। অবশ্য এই সময় ক্যাচ ছাড়ার মতো ঘটনারও জন্ম দিয়েছে বাবর আজমরা। ৮.৫ ওভারে পঞ্চম উইকেট পতনের পর ১১.১ ওভারে উঠেছে ১১২ রান।
২৯ রানে তিনটি উইকেট নেন পেসার হারিস রউফ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন শাদাব খান, ইফতিখার আহমেদ ও নাসিম শাহ।
ভয়েস/জেইউ।